মাটির নিচে পানি বা ভূগর্ভস্থ পানি রহস্য: মাটির নিচ থেকে কিভাবে এত বিপুল পরিমাণ স্বচ্ছ পানি বের হয়, এই বিষয়টি কখনো ভেবে দেখেছেন? এই পানি কিভাবেই বা মাটির নিচে অবস্থান করে? আপনাদের অনেকের মতই আমি নিজেও একসময় মনে করতাম, মাটির নিচে হয়তো বড় বড় ফাঁকা স্থান বা কেভ রয়েছে এবং সেখানেই পানি জমা হয়।
এই কেভ বরাবর গর্ত করতে পারলেই পাইপের মাধ্যমে পানি বের হয়ে আসে। এবং পানি তোলার ফলে যে পরিমাণ পানি কমে যায়, অর্থাৎ পানির শূন্যতা তৈরি হয়, ভূপৃষ্ঠের পানি মাটি ছুঁয়ে কেঁপে গিয়ে সেই শূন্যতা পূরণ করে।
কিন্তু একটি দীর্ঘ সময় পর আমি বুঝতে পারি যে, আমি ভুল ছিলাম। আমার চিন্তা যৌক্তিক হলেও ভুল ছিল। মাটির নিচে কোনো কেভ বা ফাঁকা স্থান নেই। আমরা বিভিন্ন প্রয়োজনে মাটির নিচে থেকে যে পানি তুলে আনি, তা মূলত বালু আর মাটির সাথে মিশে থাকে।

এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসবে, পানি যদি মাটি আর বালুর সাথে মিশেই থাকে তবে পানি এত স্বচ্ছ থাকে কিভাবে? সেই সাথে এত বিপুল পরিমাণ পানি অল্প সময়ের মধ্যে মাটি আর বালু থেকে কিভাবে আলাদা হয়?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতেই নিজ চেষ্টায় এই মডেলটি তৈরি করেছি। আশা করি প্রশ্নগুলোর বোধগম্য উত্তর দিতে পারবো। সেই সাথে এই ভিডিওতে মাটির নিচে থাকা তেল এবং গ্যাস সম্পর্কেও বলা হবে। আমি জুম্মান আছি আপনাদের সাথে। আপনারা দেখছেন বিজ্ঞান পাইসি।
আরও পড়ুনঃ ঋতু পরিবর্তন এবং মরুভূমি Season change on earth and Desert
পৃথিবীর পানির পরিমাণ (Earth Total Water)
পৃথিবীর ৭১% প্রকৃষ্ট পানি দ্বারা বেষ্টিত, যার ফলে দূর থেকে পৃথিবীকে নীল দেখায়। এবং এই জন্য পৃথিবীকে বলা হয় ব্লু প্ল্যানেট বা নীলগ্রহ। খালি চোখে পৃথিবী পৃষ্ঠে যে পানি দেখা যায়, এর বেশিরভাগই ব্যবহারের অযোগ্য।
এমনকি পৃথিবীতে থাকা মোট পানির ৯৯.৭% পানি মানুষ সরাসরি ব্যবহার করতে পারে না, যেমন সমুদ্রের পানি, বায়োমন্ডলে থাকা পানি, মেরুতে জমে থাকা পানি ইত্যাদি।
মানুষের ব্যবহার উপযোগী বা ফ্রেশ ওয়াটারের বড় একটি অংশ রয়েছে মাটির নিচে, যাকে বলা হয় গ্রাউন্ড ওয়াটার বা ভূগর্ভস্থ পানি। এই ভূগর্ভস্থ পানির পরিমাণ পৃথিবীর মোট পানির ০.৬১%।
এখন এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, পৃথিবীর মোট পানি এই বিষয়টি কি? পৃথিবীর পানি একটি ক্লোজড সিস্টেমের মধ্যে আবদ্ধ। অর্থাৎ পৃথিবীতে নতুন করে পানি তৈরি হয় না, আবার যেই পানি রয়েছে তাও ধ্বংস হয় না। তার মানে পৃথিবীতে পানির পরিমাণ নির্দিষ্ট।

সুতরাং আজকে আপনি যে পানি ব্যবহার করছেন, এমনও হতে পারে এই একই পানি ডাইনোসরও ব্যবহার করেছিল। পৃথিবীর এই নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি চক্রাকারের রূপ পরিবর্তন করে, যাকে বলা হয় ওয়াটার সাইকেল বা পানি চক্র। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, পৃথিবীর এই নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি কোথায় কোথায় কিভাবে রয়েছে?
এই চারটি লক্ষ্য করুন। এখানে দেখানো হয়েছে, পৃথিবীর মোট পানির কত শতাংশ কোথায় রয়েছে। যেমন সমুদ্রে রয়েছে ৯৭.২%, মেরুর বরফে রয়েছে ২.১৫%, ভূগর্ভস্থ পানির পরিমাণ ০.৬১%। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে পানি থাকলেও, মানুষ তার ব্যবহারের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল।
আরও জানুনঃ হার্প কী? What Is HAARP and Behind story of HAARP conspiracy theory
মাটির নিচে পানি যেভাবে থাকে (Aquifer)
এখন ভূগর্ভস্থ পানি, অর্থাৎ মাটির নিচে কিভাবে পানি জমা থাকে তা বলা যাক। ভূপৃষ্ঠের উপরে থাকা নদীর পানি, জলাশয়ের পানি কিংবা বৃষ্টির পানি এরা মাটি চুইয়ে ভূপৃষ্ঠের নিচের দিকে যায়। অনেকটা বালুর মধ্যে পানি দিলে যেমন পানির নিচে চলে যায়, ঠিক তেমন।
তবে এখানে একটি বিষয় রয়েছে। পানি যদি মাটি চুইয়ে শুধু নিচেই যেতে থাকে, তবে পানি অনেক গভীরে চলে যাবে এবং পানি এতটাই নিচে চলে যাবে যে সেখান থেকে পানি তোলা সম্ভব হবে না।

ভূপৃষ্ঠের নিচের মাটিতে বিভিন্ন ধরনের শিলা স্তর রয়েছে। এদের মধ্যে একটি ধরনের শিলা স্তর হচ্ছে “একই ফার”। এই একই ফার নুড়ি, বালি, পলি ইত্যাদি দিয়ে তৈরি। একই ফারের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এই শিলাস্তরকে পানি ভেদ করতে পারে না। অর্থাৎ, একই ফারে থাকা নুড়ি-বালির ফাঁকে ফাঁকে পানি জমা থাকে এবং এই পানিকেই বলা হয় ভূগর্ভস্থ পানি।
একই ফারের সাইজ ছোট থেকে বড় হতে পারে। এটি ভূপৃষ্ঠের নিচে বিভিন্ন গভীরতায় থাকতে পারে এবং বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হতে পারে। আমেরিকাতে ছোট-বড় মিলিয়ে ৬৮টি একই ফার রয়েছে। নিউজিল্যান্ডে রয়েছে ২০০টির মতো।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সঠিক সংখ্যাটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশের ভূমির নিচে থাকা একই ফার খুব একটা গভীরে নয়। বাংলাদেশের ভূগর্ভস্থ পানি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের কিছু লিংক ভিডিওর ডেসক্রিপশনে দেয়া থাকবে।
এখন, একই ফারের বালি এবং পলির ফাঁকে থাকা পানি কিভাবে উপরে আসে তা বলা যাক। এখানে ছোট পরিসরে মাটির নিচের অবস্থা দেখানো হয়েছে। মনে করুন, ভূগর্ভের এই স্থানে একটি একই ফার রয়েছে এবং একই ফারে থাকা পানির লেভেল, অর্থাৎ ওয়াটার টেবিল এই পর্যন্ত। এখানে খেয়াল করুন, পানি কিন্তু বিশাল কোনো ফাঁকা স্থানে অবস্থান করছে না, বরং বালির ফাঁকে ফাঁকে অবস্থান করছে।
এখন একটি পাইপ একই ফারের গভীরতা পর্যন্ত স্থাপন করা যাক। এই পাইপের ভেতরে দেখুন, পানি জমা রয়েছে এবং সেই পানি ভূগর্ভস্থ পানির লেভেল পর্যন্ত রয়েছে। অর্থাৎ, বালির ফাঁকে ফাঁকে থাকা পানি পাইপের মধ্যে এসে জমা হয়েছে। এখন পাইপের মধ্যে জমা থাকা এই পানি একটি সিরিঞ্জের মাধ্যমে বের করে নিয়ে আসা যাক।
এখানে খেয়াল করুন, পানি বের করে নিয়ে আসার ফলে যে পরিমাণ পানি কমে যাচ্ছে, তার সাথে সাথেই তা পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। কারণ, পাইপের ভেতরে থাকা পানি বের করে ফেলার কারণে পাইপের ভেতরে নিম্নচাপ তৈরি হয়। অন্যদিকে, পাইপের বাইরে উচ্চচাপ বিরাজ করে। ফলে পাইপের নিচ দিয়ে পানি এসে চাপের অসমতাকে ব্যালেন্স করে। এভাবেই আমরা ভূগর্ভস্থ পানি পেয়ে থাকি।
এই মডেলটি ছোট পরিসরে হওয়ার ফলে অল্প পরিমাণ পানি উঠানোর কারণে পানির লেভেল নিচে নেমে যাচ্ছে। তাছাড়া এখান থেকে শুধু পানি তোলার কাজ হচ্ছে, যার ফলে ওয়াটার লেভেল নিচে নেমে যাচ্ছে। তবে আমরা যদি পানি তোলার সাথে সাথে সমপরিমাণ পানি এখানে রিফিল করি, তবে পানির লেভেল নিচে নামবে না।
বিশেষ আর্টিকেল: ভূমিকম্প এবং সুনামি Earthquake and Tsunami
ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণ (why water level is decreasing?)
প্রায় সময় একটি কথা আমরা শুনে থাকি, এবং সেটি হচ্ছে “পানির স্তর নিচে নেমে গেছে।” এমনটা ঘটে মূলত, যে পরিমাণ পানি আমরা ভূগর্ভ থেকে তুলে আনছি, সেই পরিমাণ পানি রিফিল হচ্ছে না।
এর কারণ হচ্ছে, আমরা ভূপৃষ্ঠকে কংক্রিট দিয়ে ঢেকে দিচ্ছি। ফলে বৃষ্টির পানি বা অন্যান্য উৎসের পানি মাটি চুইয়ে নিচে যেতে পারছে না। যার কারণে আমরা পানি তুলে আনার ফলে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে এবং তার রিফিল হচ্ছে না।
আগের দিনে মাত্র ১০ থেকে ২০ ফুট গভীরতার কুয়া খুললেই গ্রাউন্ড ওয়াটার পাওয়া যেত। বর্তমানে সেটা সম্ভব নয়। কারণ, একই ফারে থাকা পানির ওয়াটার লেভেল নিচে নেমে গেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ঢাকা শহরের পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গিয়েছে। আসলে সম্পূর্ণ ঢাকা শহর বলতে গেলে কংক্রিট দিয়ে মোড়ানো। ফলে ভূপৃষ্ঠের পানি বা সারফেস ওয়াটার নিচে যেতে পারে না। যার ফলে ঢাকার পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নেমে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ জলবায়ু পরিবর্তন এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা Climate change and Nobel prize
ভূগর্ভস্থ পানি কেন এতটা স্বচ্ছ (why is groundwater clean?)
যাই হোক, এখন বলা যাক ভূগর্ভস্থ পানি কেন এতটা স্বচ্ছ। আপনারা অনেকেই হয়তো এই ধরনের ওয়াটার ফিল্টার দেখেছেন। এই ফিল্টারে থাকা কয়েক স্তরের নুড়ি অতিক্রম করতেই পানি অনেকটা স্বচ্ছ হয়ে যায়।
অন্যদিকে গ্রাউন্ড ওয়াটারের ক্ষেত্রে, পানি মাটির বিশাল স্তরকে অতিক্রম করে একইফারে যায়, যা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এত বিশাল পরিমাণ মাটির স্তর ভেদ করার ফলে পানিতে থাকা সকল অপবিত্রতা ফিল্টার হয়ে যায়। যার ফলে গ্রাউন্ড ওয়াটার স্বচ্ছ এবং নিরাপদ হয়।
ভূগর্ভস্থ পানি দূষণের প্রধান কারণ

তবে গ্রাউন্ড ওয়াটারও দূষিত হতে পারে। এটি প্রাকৃতিক এবং মানবসৃষ্ট এই দুই কারণে দূষিত হতে পারে। ভূগর্ভের যেখানে পানি রয়েছে, সেখানে যদি আগে থেকেই আর্সেনিক বা ফ্লোরাইডের মতো উপাদান থাকে কিংবা অবাঞ্ছিত কোনো উপাদানের উপস্থিতি থাকে, তবে সেই পানিকে দূষিত পানি বলা হয়।
এটি হচ্ছে প্রাকৃতিক দূষণ। মানবসৃষ্ট কারণের মধ্যে রয়েছে জমিতে অতিরিক্ত সার ব্যবহারের ফলে, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার ত্রুটি, মাটিকে দূষিত করা ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে ক্ষতিকর পদার্থ বৃষ্টির পানির সাথে মাটির নিচে গিয়ে ভূগর্ভস্থ পানিকে দূষিত করে।
ভূগর্ভস্থ পানি প্রবাহ (groundwater flow)
ভূপৃষ্ঠের উপরে থাকা পানি যেমন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হয়, ঠিক তেমনি ভূগর্ভস্থ পানিও এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হয়। শিলাস্তরের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে পানির প্রবাহের গতি কমবেশি হয়ে থাকে।
ভূপৃষ্ঠের উপরে থাকা পানি উঁচু স্থান থেকে নিচু স্থানে প্রবাহিত হয়। কিন্তু ভূপৃষ্ঠের নিচে থাকা পানি উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলে প্রবাহিত হয়।
যার ফলে ভূগর্ভস্থ পানি যে শুধুমাত্র উপরের থেকে নিচে যায়, তা নয়। প্রেসার ডিফারেন্সের উপর ভিত্তি করে গ্রাউন্ড ওয়াটার উপরের দিকেও আসতে পারে। এই কারণেই আমাদের বিশাল বিশাল বদ্ধ পুকুরগুলো শুকিয়ে যায় না।

পানি যদি শুধুমাত্র নিচে যেত, তবে বদ্ধ পুকুরের পানি নিচে গিয়ে পুকুর শুকিয়ে যেত। কিন্তু সেটা হতে দেখা যায় না। সুতরাং, বদ্ধ পুকুরের পানি থাকার পেছনে গ্রাউন্ড ওয়াটারের ভূমিকা রয়েছে।
তবে পানির আপওয়ার্ড, অর্থাৎ উপরের দিকে আসার ফলে ড্যাম নির্মাণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ইঞ্জিনিয়ারিং করতে হয়। যেকোনো ড্যাম নির্মাণের উদ্দেশ্য হচ্ছে পানিকে এক স্থানে আটকে রাখা।
কিন্তু এমন ক্ষেত্রে দেখা যায়, গ্রাউন্ড ওয়াটার মাটির নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অপর পাশে আপওয়ার্ড প্রেসারের ফলে উপরে উঠে আসে। যা ড্যামের উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে এবং অনেক সময় ড্যামের মারাত্মক ক্ষতিও সাধন করে। এজন্য ড্যাম নির্মাণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হয়।
আরও পড়ুনঃ বন্যা কেন হয় এবং কোন বন্যা সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর All kinds of Flood
ভূগর্ভস্থ তেল ও গ্যাস (underground oil and gas)
মাটির নিচে থাকা তেল পানির মতো একইভাবে ভূগর্ভে অবস্থান করে এবং পাম্পের মাধ্যমে পানি যেভাবে উপরে নিয়ে আসা হয়, ঠিক একই প্রক্রিয়ায় ভূগর্ভস্থ তেল উপরে নিয়ে আসা হয়। গ্যাসের ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া।
তবে গ্যাসের ক্ষেত্রে ভূগর্ভে থাকা পাইপের লাইন কিছুটা উপর থেকে সিল করা থাকে যেন শুধুমাত্র মেইন লাইন দিয়ে গ্যাস উপরে উঠে আসে। পানি এবং তেলের ক্ষেত্রে এই সিল করার প্রয়োজন পড়ে না।

বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ তার খাবার পানির জন্য ভূগর্ভস্থ পানির উপর নির্ভরশীল। সেই সাথে কৃষিকাজে ব্যবহার করা মোট পানির ৭৫ শতাংশের উৎস হচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানি।
সুতরাং, আমরা যতটা পানি ভূগর্ভ থেকে তুলে আনছি, সেই পরিমাণ পানি আবার ভূগর্ভে যাচ্ছে কিনা, সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।
আমরা যদি সৌন্দর্যের নামে সবকিছুকে কংক্রিট দিয়ে ঢেকে দেই, তাহলে ভবিষ্যতের খাবার পানি অপ্রতুল হয়ে যাবে। ভবিষ্যতের জনসংখ্যা কেমন হবে তা বোঝার ক্ষেত্রে একটি সহজ উদাহরণ হলো লজিস্টিক ট্রিক ম্যাপ।
এই সিম্পল রিকুয়েশনের মাধ্যমে প্রকৃতির বিশৃঙ্খলাকে বর্ণনা করা যায়। এই লজিস্টিক ম্যাপ এবং এর থেকে প্রাপ্ত বাইফারকেশন ডায়াগ্রাম কিভাবে প্রকৃতির বিশৃঙ্খলাকে ব্যাখ্যা করে, তা বিস্তারিত জানতে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন।
প্রায়ই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর
ভূগর্ভস্থ পানি কাকে বলে?
উত্তর: ভূপৃষ্ঠের উপরে থাকা নদীর পানি, জলাশয়ের পানি কিংবা বৃষ্টির পানি মাটি চুইয়ে ভূপৃষ্ঠের নিচের দিকে যায় এবং একই ফারের নুড়ি-বালির ফাঁকে জমা থাকে। এই পানিকেই ভূগর্ভস্থ পানি বলা হয়।
ভূগর্ভস্থ পানি রক্ষার উপায় কী?
উত্তর: ভূপৃষ্ঠের পানি যেন মাটি চুইয়ে নিচে যেতে পারে, সেজন্য কংক্রিট দিয়ে সবকিছু ঢেকে না দেওয়া এবং তুল্য পরিমাণ পানি ভূগর্ভে রিফিল নিশ্চিত করা।
ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার কী কী?
ভূগর্ভস্থ পানি মানুষের খাবার পানির উৎস এবং কৃষিকাজে ব্যবহৃত মোট পানির ৭৫ শতাংশ এই পানি থেকে আসে।
ভূগর্ভস্থ পানি রক্ষার উপায় সম্পর্কিত পোস্টার কী হতে পারে?
পোস্টারে দেখানো যেতে পারে কীভাবে কংক্রিট ঢেকে দেওয়া বন্ধ করা যায় এবং পানি রিফিল নিশ্চিত করা যায়।
ভূগর্ভস্থ পানি রক্ষায় কী কী কর্মসূচি নেওয়া যেতে পারে?
পানির স্তর ঠিক রাখতে কংক্রিট ঢেকে দেওয়া কমানো এবং বৃষ্টির পানি ভূগর্ভে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করা।
ভূগর্ভস্থ পানি দূষণের প্রধান কারণ কোনটি?
প্রাকৃতিক কারণে আর্সেনিক বা ফ্লোরাইডের মতো উপাদানের উপস্থিতি এবং মানবসৃষ্ট কারণে অতিরিক্ত সার ব্যবহার, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার ত্রুটি, এবং মাটির দূষণ।
ভূগর্ভস্থ পানি টেকসই করার জন্য কী কী কর্মসূচি নেওয়া যায়?
তুল্য পরিমাণ পানি রিফিল নিশ্চিত করা এবং মাটির নিচে দূষিত পদার্থ প্রবেশ রোধ করা।
ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে কেন?
আমরা যে পরিমাণ পানি ভূগর্ভ থেকে তুলে আনছি, সেই পরিমাণ পানি রিফিল হচ্ছে না। কংক্রিট ঢেকে দেওয়ার ফলে বৃষ্টির পানি মাটি চুইয়ে নিচে যেতে পারছে না।
মাটির নিচে পানি কিভাবে থাকে?
মাটির নিচে একই ফারের নুড়ি-বালির ফাঁকে পানি জমা থাকে।
মাটির নিচে পানির স্তর কিভাবে থাকে?
ভূগর্ভস্থ পানির স্তর, অর্থাৎ ওয়াটার টেবিল, একই ফারে থাকা পানির পরিমাণ অনুযায়ী অবস্থান করে।
মাটির কত ফুট নিচে পানি থাকে?
আগের দিনে ১০ থেকে ২০ ফুট গভীরতায় পানি পাওয়া যেত। বর্তমানে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এটি আরও গভীরে চলে গেছে।
Comments ৪